23 Feb 2025, 04:36 am

গোপালগঞ্জে ৫ টাকার চিতই পিঠায় ৩০ রকমের ভর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ঘাঘর বাজারের মহুয়ার মোড়ে পিঠা বিক্রি করেন মোঃ শুভ শেখ ও  মোঃ আলী শেখ। এখানে এ দুই ভাই ৫টাকা করে এক একটি চিতই পিঠা বিক্রি করেন। তার সাথে ফ্রি দেন ৩০ রকমের ভর্তা। ভর্তার টানে তাদের পিঠার দোকানে ভিড় লেগেই থাকে। উপজেলার মধ্যে বেচা-বিক্রিও তাদের সবচেয়ে বেশি।

৫ টাকার চিতই পিঠার সাথে এখানে চিংড়ি ভর্তা, চ্যাপা শুটকি ভর্তা, পাবদা শুকটি ভর্তা, পুটি শুটকি ভর্তা, টাকি শুটকি ভর্তা, লইট্টা শুটকি ভর্তা, লোনা ইলিশ ভর্তা, কাচকি শুটকি ভর্তা, ডাল ভর্তা, বাদাম ভর্তা, সরিষা ভর্তা, রসুন ভর্তা, কাঁচা মরিচ ভর্তা, শুকনা মরিচ ভর্তা, টমেটো ভর্তা, ধনেপাতা ভর্তা, কালিজিরা ভর্তা, আলু ভর্তা, মিক্স ভর্তাসহ প্রায় ৩০ প্রকারের ভর্তা মিলছে। ভর্তা গুলো পিঠার দোকানের টেবিলে সাজানো থাকে। লোভনীয় স্বাদ গ্রহণ করতে এখানে বিভিন্ন বয়সের মানুষের সমাগম ঘটছে। তারা ৫ টাকা দিয়ে একটি চিতই পিঠা কিনে সাথে রকমারী ভর্তার স্বাদ নিতে পরোছেন। চিতই পিঠার সাথে পছন্দের বাহারী সব ভর্তার স্বাদ নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে ভোজন রসিকরা ফেরেন গন্তব্যে।
পিঠা বিক্রেতা মোঃ শুভ শেখ বলেন, করোনার আগে আমাদের ঢাকায় পিঠার দোকান ছিল। করোনার সময় লকডাউন দিলে আমরা বাড়ি চলে আসি। বাড়ি এসে আমরা দুই ভাই কোটালীপাড়া উপজেলা সদরের  মহুয়ার মোড়ে প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে পিঠা বিক্রি শুরু করি। গভীর রাত পর্যন্ত চলে আমার এ পিঠা বিক্রি। নানা ধরণের পিঠা তৈরী করলেও সব চেয়ে বেশী চলে চিতই পিঠা এবং ভর্তা।
অপর পিঠা বিক্রেতা সহোদর মোঃ আলী শেখ বলেন, আমরা প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ কেজি চালের গুড়ি দিয়ে চিতই পিঠা বানিয়ে এখানে বিক্রি করি। এতে আমাদের প্রায় ১৫শত থেকে ২হাজার টাকা লাভ হয়। এ শীতের মৌসুমে আমরা শুধু এখানেই পিঠা বিক্রি করিনা। বিভিন্ন সংগঠন থেকে পিকনিকে গেলে তারা পিঠা খাওয়ার জন্য আমাদেরকে সাথে নিয়ে যায়। তখন তারা আমাদেরকে যে ধরণের পিঠা তৈরি করে দিতে বলে আমরা সেই ধরণের পিঠা তৈরি করে দেই। আমাদের প্রায় শতাধিক প্রকার পিঠা তৈরির অভিজ্ঞতা রয়েছে।
কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ দাস (৪৫) বলেন, এখানে ৫ টাকা দিয়ে একটি চিতই পিঠা কিনলে সাথে ৩০ প্রকারের ভর্তা পাওয়া যায়। এক এক ধরণের ভর্তার স্বাদ এক এক রকম। পিঠা খাওয়া শুরু করলে ভর্তা দিয়ে এক সাথে ৮/১০ টি খেয়ে ফেলি। তাই  সন্ধ্যায়  ভর্তার টানে এখানে  চিতই পিঠা খেতে আসি।
পিঠা খেতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এ উপজেলায় একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকুরী করি। পরিবারের কেউ এখানে থাকে না। তাই বাসায় পিঠা তৈরি করে খাওয়ার সুযোগ নেই। এ জন্য যখন পিঠা খেতে মন চায় তখনই এখানে চলে আসি। দুই ভাইয়ের চিতই পিঠা ও ভর্তা খুবই সুস্বাদু।
ঘাঘর বাজারের ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান বলেন, সন্ধ্যায় বাড়িতে  মেহমান আসলে তাদের চিতই পিঠা ও ভর্তা দিয়ে আপ্যায়ন করি। এখান থেকে পিঠা কিনে নিয়ে যায়। তারা এ পিঠা খেয়ে খুব তৃপ্তি পায়।
অন্য দিকে শীতের আমেজ শুরু হতেই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের ফুটপাতে পিঠা বিক্রির ধুম পড়েছে। নানা বয়সের অন্তত ২০০ মানুষ বিভিন্ন ধরণের পিঠা তৈরি করে ভোজন রসিকদের কাছে বিক্রি করছেন। তবে সবচেয়ে বেশী বিক্রির তালিকায় রয়েছে চিতই পিঠা,বিভিন্ন রকমের ভর্তা ও ভাপা পিঠা।
প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে পিঠা বিক্রি শুরু হলেও সন্ধ্যার পরে এসব পিঠার দোকানে ভোজন রসিকদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ক্রেতারা পছন্দের ভর্তা দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খায় এ চিতই পিঠা। কেউবা আবার আপন জনদের জন্য কিনে নিয়ে যান। পিঠা বিক্রেতারাও কামিয়ে নিচ্ছেন টাকা। পিঠা বিক্রি করে তারা সংসার চালাচ্ছেন স্বাচ্ছন্দে।
কোটালীপাড়া উপজেলা সদরের পিঠা বিক্রেতা জমিলা খাতুন বলেন, আমরা  উপজেলা সদরে ফুটপাতে বসে খোলা আকাশের নিচে গভীর রাত পর্যন্ত পিঠা বিক্রি করি। আমাদেরকে সরকারি ভাবে স্থায়ী ভাবে বসার একটু জায়গা করে দিলে আমরা উপকৃত হতাম।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 7047
  • Total Visits: 1617191
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1708

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ রবিবার, ২৩শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ইং
  • ১০ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (বসন্তকাল)
  • ২৩শে শা'বান, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, ভোর ৪:৩৬

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
     12
2425262728  
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018